রাংপানি (Rangpani), প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই পর্যটন স্থানটি সিলেট শহর থেকে প্রায় ৫৪ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামপুঞ্জি এলাকায় অবস্থিত। শ্রী শব্দের অর্থ হলো সুন্দর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে এতটাই ভরপুর যে এলাকার নামই হয়েছে শ্রীপুর আর এই শ্রীপুরেই সীমান্তবর্তী নদী রাংপানি এর অবস্থান। মেঘালয়ের জৈন্তা পাহাড়ের রংহংকং জলপ্রপাত থেকে স্বচ্ছ জলের থেকেই এর উৎপত্তি। এটি অনেকের কাছে শ্রীপুর পাথরকোয়ারি নামেও পরিচিত।
রাংপানি নদীর পাশেই রয়েছে খাসিয়াদের গ্রাম মোকামপুঞ্জি। খাসিয়ারা গ্রামকে পুঞ্জি নামেই ডাকে। প্রাচীনকাল থেকে এই নদী আর পাহাড় ঘিরে তাদের বসবাস। পুঞ্জিতে গেলেই জানা যাবে খাসিয়াদের ইতিহাস-ঐতিহ্য। নদীর তীরে আর পুঞ্জির আশপাশের এলাকায় আশি ও নব্বইয়ের দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের একাধিক ছবির শুটিং হয়েছে। শাবনাজ-নাঈম জুটির প্রথম ছবি চাঁদনী মুভির জনপ্রিয় গান ‘ও আমার জান, তোর বাঁশি যেন জাদু জানে রে’ ছাড়াও বেশ কিছু দৃশ্য শ্রীপুরের বিভিন্ন স্থানে চিত্রে ধারণ করা হয়েছিল।
পাহাড়ি সরু পথ ধরে নিচে নামতেই রাংপানি নদীর কোলে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা হরেক রঙা পাথরের দেখা মিলবে। পাথর তোলা স্থানগুলো দ্বীপের মতো হয়ে আছে। কোনোটিতে জমে আছে পানি। পাশেই পড়ে থাকতে দেখা যায় বালু ও পাথরবাহী বারকি নৌকা। বর্তমানে এই নদী থেকে পাথর তোলা বন্ধ থাকায় আবারও ধীরে ধীরে নিজের সেই পুরোনো রূপে ফিরতে শুরু করেছে
রাংপানি যাওয়ার উপায়
রাংপানি যেতে চাইলে প্রথমে দেশের যেকোনো স্থান থেকে সিলেটে যেতে হবে। সিলেট শহর থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস, লেগুনা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা ব্যক্তিগত গাড়িতে সরাসরি যাওয়া যায় জৈন্তাপুরের শ্রীপুরে। সারা দিনের জন্য সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া নেবে ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা। জৈন্তাবাজার বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পর শ্রীপুর চা-বাগান। চা বাগানের উল্টো দিকের সরু পথ পাড়ি দিলেই রাংপানি নদী। স্থানীয় বারকি নৌকা নিতে পারেন নদীর ওপারে যেতে। নৌকার ভাড়া ঠিক করে নিতে হবে আগেই।
কোথায় খাবেন
দুপুরের খাবার জৈন্তাবাজার অথবা মোকামপুঞ্জি এলাকায় সেরে নিতে পারেন।